Wednesday, December 26, 2007

ঢাকার চিঠি - ০৪

ঢাকায় এখন ভালো মিষ্টি মানেই প্রিমিয়াম সুইটস। আলাউদ্দীন আর বনফুলকে এখন সেকেন্ড গ্রেড বলে ধরা হয়। ঈদের আগের দিন টাকা তুলতে গেছি চার নম্বরে (ধানমন্ডি)। পাশেই দেখি প্রিমিয়ামের দোকান। ভাবলাম শ্বশুরবাড়ির জন্য এক প্যাকেট নেই। একটু পরে মনে হল, স্পঞ্জ রসগোল্লা খাওয়া হয়না বহুদিন, সেটাও নিয়ে ফেলি। হঠাৎ চোখ পড়ল শোকেসে সাজিয়ে রাখা ঘি এর বয়ামগুলোর উপর। শেষে কি মনে করে, এক বয়াম ঘি-ও কিনে ফেললাম।

আমি ঢাকায় তিনবেলাই আলুভর্তা আর ভাত খাই। তো ঘি কেনার পর, এখন ধোঁয়াওঠা ভাতে এক চামচ করে ঘি ঢেলে দেই। এর কি স্বাদ, তা ব্যাখ্যার ধৃষ্টতায় গেলাম না। বাঙালীর এই অমৃতের কথা ফরাসীরা জানলে হয়তো ড্রাম ড্রাম ঘি এয়ার ফ্রান্সের খালি কার্গো বিমানে ভরে নিয়ে পালাতো (বিষ্ণুমুর্তি চুরির পর বেহুদা খালি প্লেন নিয়ে কি লাভ)। ঘি এর বয়ামের দিকে হাত বাড়ালে অবশ্য বাবা কেমন ঘোঁৎ করে আওয়াজ করেন। আমি হাসি আর সুমন চৌধুরীর সিগনেচার আউরে যাই,
"ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ (ঋণ করে হলেও ঘি খাবি, যদ্দিন বাঁচবি সুখে বাঁচবি)"

ঈদের পর দিন বোরিং গেল। হাটতে বেরুলাম। পথে প্রকৃতির ডাক পেয়ে কঠিন বিপদে পড়লাম। বাইরে এ জাতীয় সমস্যার ভালো সমাধান হল ম্যাকডোনল্ডসে ঢুকে পড়া। ঈদের ছুটিতে দোকানপাট বন্ধ। ফলে বাঁচতে হলে জীপার খুলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। আমার জায়গায় একটা মেয়ে হলে কি হতো কল্পনা করার চেষ্টা করি! ২৭ নম্বরে ন্যান্দোস (Nando's) খুলেছে নতুন। দাঁতে দাঁত চেপে দৌড় দেই সেদিকে।


ন্যান্ডোজ (ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোড)
ন্যান্ডোজ (ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোড)

নান্দোস আমার পছন্দের জায়গা। ঢাকায় খুলেছে শুনে ভীষন ভালো লেগেছিল। দিলাম অর্ডার করে, কোয়ার্টার চিকেন মিল! খাবার ভালো, কিন্তু দামটা আরও ভালো ৩১০টাকা! মালেশিয়াতেও ঠিক এই দাম। ঢাকার মানুষের পকেট ভারি নাহলে কি করে এমন দাম রাখতে পারে এরা? ভালো লাগলো ওয়েটারদের, সবাই ছাত্র। কেউ পার্ট টাইম, কেউ ফুল টাইম। ভালো ইংরেজী বলে সবাই। কথা হল রমেনের সাথে। জানা গেল একাজে পয়সা আসে ভালোই। তাকে চাকরী পেতে রীতিমতো কয়েকধাপ ইন্টারভিউ নাকি দিতে হয়েছে।

নান্দেসোর ঠিক উল্টো দিকেই এটসেটেরা। আর এটসেটেরার দোতলায় হল দেশের বনেদী কফি শপ, "কফি ওয়ার্ল্ড"। মাসুদ ভাই বলেছিলেন, আমাকে কফিওয়ার্ল্ড আর কজমোতে মানাবে না... কথা ভুল না। নানাবয়সি যুগলের ভীড়ে খানিকটা অস্বস্তিতেই পড়তে হল। তারউপরে বনেদী দোকান, ওয়েটাররা সহজে পাত্তাও দিতে চায় না। দুটো লা'তে খেতে আমার ২৯৯টাকা বের হয়ে গেল।

দেশ যখন এদিকে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে তখন স্টার কাবাবে গিয়ে একটু শান্তি লাগলো। তবে পেটপুরে খেতে গিয়ে (২টা খিরি, ১টা শিক, ১টা ঝাল ফ্রাই, ১টা ব্রেন, ১টা স্প্রাইট, ১টা চা, ২টা বাটার নান) লাগলো ৪০১টাকা। কি বুঝলেন?


দেশে এসে ছবি তোলার অনেক শখ ছিল। পরশু গেলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। টিএসসিতে হালকা পাতলা কিছু স্ন্যাপ নিয়ে ঢুকলাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। কেমন বিরান হয়েগেছে। সেই সবুজও নেই, সেই পরিচ্ছন্নভাবটাও উধাও। ঘাসওঠা মাঠে শুয়ে আছে বাস্তুহারা মানুষেরা। একটু এগুতেই চোখে পড়ল বিশাল জলাধার, যার পিছনে এক অসমাপ্ত স্থাপনা। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে যখন পৌছালাম তখন পথ আগলে দাড়াল দুই আনসার।
- "এইটা কি ভাই? কি বানায় এইখানে"
- "এইডা স্বাধীনতা ইস্তমভো.."
- "ঢুকা যাবে না?"
- "না । কাজ শ্যাষ হলে খুলে দেওয়া হবি"
- "কবে শুরু হইছে এইটা বানানো?"
- "আট বচ্ছর, এক পাট্টি শুরু করে, আরেক পাট্টি বোন্দো করে.. এখন কাজ বোন্দো আছে.. ভাই এইডা কি ভিডো ক্যামেরা?"

অযত্ন অবহেলায় অর্ধসমাপ্ত স্বাধীনতা স্তম্ভের টেরাকোটা খচিত দেওয়াল
অযত্ন অবহেলায় অর্ধসমাপ্ত স্বাধীনতা স্তম্ভের টেরাকোটা খচিত দেওয়াল

আমি কথা না বলি খালি চোখে একটু দেখার চেষ্টা করি। এখানে নাকি আন্ডারগ্রাউন্ড জাদুঘর হবে। বিশাল স্তম্ভ হবে, চারপাশ ঘিরে থাকবে জলাশয়.. । টেরোকোটা সজ্জিত উচু দেওয়ালে অলসভাবে বসে আছে কয়েকটা চিল। জলায়শের পানিতে কাপর ধুতে ব্যস্ত গৃহহীণ মানুষেরা। আমাদের প্রাণের গৌরবের প্রতীক সেই স্বাধীনতা স্তম্ভকে এমন পটভূমিতে কল্পনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রবেশদ্বারের পাশেই আলু চাষ হচ্ছে। স্বাধীনতায় তো আর পেট ভরে না।
স্বাধীনতায় পেট ভরে না, আলুচাষে ভরে (সোহরাওয়াদী উদ্যান, ২৪/১২/০৭)
স্বাধীনতায় পেট ভরে না, আলুচাষে ভরে (সোহরাওয়াদী উদ্যান, ২৪/১২/০৭)

জলপাই এর পাহারা বাঁচিয়ে ছুঁয়ে ফেলা এক চিলতে শিখা চিরন্তনের আঁচ
জলপাই এর পাহারা বাঁচিয়ে ছুঁয়ে ফেলা এক চিলতে শিখা চিরন্তনের আঁচ


হঠাৎ দূরে দেখি এক চিলতে আগুন, শিখা চিরন্তন। ক্যামেরা নিয়ে ছুটে যাই ছবি তুলতে। পথ আটকায় জলপাই ভ্রাতারা। ঢোকা যাবে না, ছবি তোলা যাবে না। তর্কে যাই না, কি দর্কার প্রকাশ্যে চড়থাপ্পর খেয়ে। শিখা চিরন্তন এর চেয়ে আমার "সম্মান" যে এখন অনেক বেশী জরুরী। এই দেশটাকে মাঝে মাঝে ব্যাখ্যা করা বড় কঠিন হয়ে যায়..


"এই লেইন অতিক্রম সর্ব সাধারনের জন্য নিষিদ্ধ" কেন?
"এই লেইন অতিক্রম সর্ব সাধারনের জন্য নিষিদ্ধ" কেন?

আপনিই বরং সুখে আছেন (অপরাজেয় বাংলা)
আপনিই বরং সুখে আছেন (অপরাজেয় বাংলা)

মনে পড়ে, ভাঁপা পিঠা?
মনে পড়ে, ভাঁপা পিঠা?

শহীদ স্মৃতিসৌধ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়শহীদ স্মৃতিসৌধ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ব্রিটিশ কাউন্সিল
ব্রিটিশ কাউন্সিল

ছবি তুলতে তুলতে একসময় হাজির হই শহীদ মিনারে। ছোটবেলায় মামার সাথে ছবি তুলতে আসতাম। দুপুর ১টার পর যখন পুলিশ পাহারা উঠে যেত, তখন দেখতাম ববর্র সব যুবক আর কিশোরেরা বেদীমূল থেকে ফুল ছিনিয়ে নিয়ে কি তান্ডবই না চালাতো। এবার গিয়ে প্রথমেই ধাক্কা খেলাম, মিনারের সমানে কিশোরেরা ব্যস্ত সাইকেল রেসিং নিয়ে। প্রচুর মানুষ বেদীমূলে বসে আড্ডারত, জুতো খুলবার বিষয়টা মাথা মনে হয় আসেই না এদের। অনেক হাটায় ক্লান্ত ছিলাম। তাই সিড়িকোনায় বসলাম। এর পরবর্তী ঘটনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। কোথা থেকে হাজির হতে শুরু করলো নানা রং এর, নানা মাপের সব ছাগল। দেশের পবিত্রতম সৌধের পাদদেশে চতুষ্পদী এই নির্বোধ প্রাণীদের কি অবাধ বিচরন! কি লজ্জা! কি লজ্জা!

সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য যাচ্ছে কাদের দখলে?
সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য যাচ্ছে কাদের দখলে?

দুর্ভাগা প্রজন্ম
দুর্ভাগা প্রজন্ম

ক্ষমতা আর বিত্তের সিড়ি কারা বেয়ে ওঠে আজ
ক্ষমতা আর বিত্তের সিড়ি কারা বেয়ে ওঠে আজ

মাঝে মাঝে বড় অসহায় লাগে, কি অদ্ভুত ভাবেই না আমাদের চেনা শহরটা ধীরে ধীরে অচেনা হয়ে যায়..

Sunday, December 23, 2007

ঢাকার চিঠি - ০৩

পাখি আমার একলা পাখি - চিল (২১/১২/০৭)
পাখি আমার একলা পাখি - চিল (২১/১২/০৭)

বাংলা মা তার প্রবাসী সন্তানদের দেশে স্বাগত জানানোর ঐতিহ্যবাহী রীতি কোনদিন ভুলবে না। আমার ক্ষেত্রে গতবার ব্যতিক্রম হয়নি, এবারো হল না। আসার ২য় দিনে পেট নেমে গেল, ৩য় দিনে সর্দি, ৪র্থ দিনে কাশি আর শ্বাসকষ্ট। আমার জন্মদাত্রী মা অবশ্য এই ভালোবাসাটা টের পান না, বরং যথাসম্ভব বিচলিত হয়ে যন্ত্রনার সৃষ্টি করেন। মালেশিয়া থেকে প্যানাডল অ্যাক্টিফাস্ট পাঠিয়ে ছিলাম, শেষ পর্যন্ত যে সেটা আমারই খেতে হবে ধারনা ছিল না।

ঈদের আগের দিন এক কাজিনের সাথে সাথে গভীর রাত পর্যন্ত গালগল্প হল। ভোর ৫টায় ঘুমাতে গেলাম। বাবার হয়তো ক্ষীন আশা ছেলে অন্তত ঈদের নামাজ পড়তে সঙ্গী হবে, কিন্তু যে ছেলে শেষ কবে ঈদের নামাজে গেছে মনে করতে পারে না তার কাছে এমন আশা না করাই শ্রেয়।

ঈদের দিন, অ্যাজ ইউসুয়াল, বোরিং গেল। লম্বা সময় লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমালাম, ইত্যবসরে শরীর ঐতিহ্য মেনে খারাপ হওয়া শুরু করলো।

কেএল-এ থাকলে ঈদের নাটক দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি। এবারে ঢাকায় এসে ধাক্কাই খেলাম। BDBangla তে বিজ্ঞাপন ছাড়া দেখে অভ্যেস হয়ে গেছে। কার সহ্য হয় ৩০ মিনিটের নাটকের মাঝে ছয় ছয়টা ৫ মিনিটের কমার্শিয়াল ব্রেক হজম করার! হুমায়ূন ভাই এর নাটকে সবগুলো চ্যানেল সয়লাব। আঙ্কেলের দিন শেষ। উনি বোধহয় SMC এর মতো কম্পিউটারে নাটকের ফর্মূলা ঢুকিয়েছেন, পারমুটেশন কম্বিনেশন করে ছাড়েন কদিন পর পর..

হুআ দাদুর নাটকের চেয়ে মোসা ফারুকীর নাটকগুলো কিঞ্চিৎ উন্নততর, তবে তার কারন নাটকের নাট্যমান নয়, বরং শ্রেফ নির্মানশৈলী। "কবিবলেছেন" দেখে খারাপ লাগেনি। ওয়েল মেড পর্নো দেখেও ভালো লাগে। ফারুকী এ পথে হাটলে কাক্কুর মতো অবস্থা হতে দেরী নাই।

আজকে দুটি অনুষ্ঠান দেখে আমি সোফা থেকে পড়ে গেছি। একটি হল গানের ম্যাগজিন অনুষ্ঠান, দেখাচ্ছিল ইসালামিক টিভিতে। ইসলামী গানে বাদ্যযন্ত্রের ভূমিকা থাকার নিয়ম নেই মনে হয়, এখানেও ব্যতিক্রম নয়। তবে দন্ডায়মান এক ভদ্রলোক (কবি মুজিব মেহেদী দেখলে বিপদ আছে!) যখন পান্দারিক (আরবী পার্কাশন ইন্সট্রুমেন্ট) বাজাতে শুরু করলেন আমি তখন হতবাক, "সাব্বাশ! বাঙ্গালী এখন ড্রামস কিবোর্ড ফেলে পান্দারিক ধরেছে!!"
দি পান্দারিক প্লেয়ার
দি পান্দারিক প্লেয়ার

দ্বিতীয় ঘটনাটা ঘটেছে ঘন্টা তিনেক আগে। চ্যানেল আই-তে হুমায়ূন মামার নাটক হবে, কিন্তু তার পরিচালক কোন এক সময়ের নায়িকা রোজিনা। ভদ্রমহিলা বয়সে আমার খালার সমান। তবে তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পরিচালনার কোন গল্প আমার জানা ছিল না। নাটকের নাম "সম্পর্ক"। নাটকটা পুরো দেখতে পারলাম না, ভুদাই ঘুড়া আর সমন্বিত বাঘের ডায়েটে যেতে বাধ্য করলেও পারতাম না। কেন? কি দর্কার বলার। আপনাদের জন্য কিছু অংশ YouTube এ তুলে দিয়েছি। বুঝে নিন কি মাল চলে এখন..





এসব কারনে ঈদের নাটক দেখা বন্ধ করেছি। কেএল গিয়ে সময় নিয়ে দেখা যাবে। না হলে তো সিডি/ডিভিডি আছেই।

মইনুদ্দীনকে নিয়ে মেজাজ খারাপ। সে আমাদের পাইলট। ঢাকায় এসেই লক্ষ্য করলাম সে ৪০ উপরে গাড়ি চালায় না, সেই রহস্য যখন সমাধান হল ততক্ষনে আমার প্রায় হাজার পনের টাকা খরচ হয়ে গেছে গাড়িটার জন্য। গাড়িটাকে যখন একটু সাইজে আনলাম, তখন কাল রাতে গ্যারেজের পিলারের সাথে ধাক্কা মেরে ব্যাটা পিছনের একটা দরজা বসিয়ে দিল (কঠিন ইচ্ছাশক্তি আর গাঁজা না খেলে কাজটা করা খুবই কঠিন)। কারো চাকরী খেতে ভালো লাগেনা, এরটা খেতে হবে। কারন এর আগেও একাধিক ঘটনার নায়ক সে। বাসার গাড়িটার অবস্থা বেশ খারাপ। গাড়ি বদলানো জরুরী। এর হাতে নতুন গাড়ি দেওয়া আর পাশের বাসার বিড়ালটাকে ড্রাইভ করতে বলার মধ্যে তেমন ফারাক নাই। পৃথিবীতে কতো নিষ্ঠুর কাজই না করতে হয়..

যাওযার আগে দুটা পলিটিকাল গসিপ শেয়ার করি। যদিও এখন ঢাকার রাস্তায় গসিপ শোনা খুব কঠিন, (জানের মায়া তো সবারই আছে) তারপরেও সিগারেট কেনার সময় কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করি। যেহেতু গসিপ তাই কান না দেওয়াই ভালো।

১. দৈনিক সংগ্রামের ১৯৭১ সালের সকল আর্কাইভড কপি ধ্বংস করতে নেমেছে একটি রাজনৈতিক দল। যে হারে সব পত্রিকায় সংগ্রাম থেকে রেফারেন্স টানা হচ্ছে তাতে কিছু মানুষ বড় গ্যাঞ্জামে পড়ে গেছেন

২. থাক, এইটা কমু না। কইয়া হুদাই ছ্যাচা খাই আর কি!

Friday, December 21, 2007

ঢাকার চিঠি - ০২

ঢাকায় মদ্যপান নিয়ে আমার প্রথম অভিজ্ঞতাটা ভুলবার না। শহরের প্রাণকেন্দ্রে কোন ঝামেলা ছাড়াই যে নিষিদ্ধ এই পানীয় পাওয়া যায় সেটা জেনেছি ইস্টার্ন প্লাজার পাশে র "শ্যালে"তে গিয়ে। সুমন ভাই (পারভেজ সাজ্জাদ) একদিন ধরে নিয়ে গেলেন, ভোদকা খেতে গিয়ে দেখা হল প্রয়াত সঞ্জীব চৌধুরীর সাথে, দলছুট তখন কেবল জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। হাতে গোনা চার পাঁচবার গেছি শ্যালে আর পিকক-এ। প্রতিবারই একটা ধরা খাবার ভয় কাজ করতো। গতবার যখন ঢাকা এলাম তখন পিয়াল ভাই নিয়ে গেলেন সাকুরাতে (মার্গারিটার প্রতি বাংলার জবাব ভোদকালাইম খেয়ে ব্যাপক আনন্দ পেয়েছিলাম)। এবার উত্তরায় এক বাড়িতে গিয়ে দেখি হোমডিলিভারীতে মদ পাওয়া যাচ্ছে, গৃহকর্তা সেলফোন ডায়াল করলেন, ওপাশ থেকে জানিয়ে দিল কি-আছে,কতো-দর.. গৃহকর্তা খানিক ভেবে অর্ডার দিলেন, মিনিট বিশেকের মাঝেই একটা গিলবি সাহেবের জিনের বোতল পৌছে দিলেন কেউ একজন। এই ঘটনাটা হয়তো আগেও ঘটতো, তবে এবারই যেহেতু প্রথম জানা হল, সে হিসেবে উল্ল্যেখ করাটা মনে হয় ভালো..

কোজি কর্নারে
কোজি কর্নারে


কাল সকালে বাবা বললেন চল, চুল কেটে আসি। আমাদের বাসায় চুল কাটা মানে কদমছাট করা। এর বাইরে একটু কায়দা করে কাটা যে সম্ভব সেটা কারো ধারনায় আসে না। যা হোক, নাপিতের দোকান বাড়ির পাশেই, কোজি কর্নার নাম। কোজি কর্নারে শুধু চুল কাটাই হয়না, চাইলে ফেসিয়ালও করে ফেলা যেতে পারে। প্রচুর কায়দা এদের চুল কাটা নিয়ে, বিদেশী স্টাইল ভালোই নকল করেছে। চুল কাটার এক পর্যায়ে আমার মুখেও ক্রীমটিম মেখে দলাই মালাই শুরু করে দিলেন নাপিত। গালে পুরুষ হাতের দলাই মলাই বিষয়টা ঠিক উপভোগ করা যায় না। আমি ঠোঁট চেপে অপেক্ষা করতে থাকি করে যন্ত্রনার শেষ হবে। সব মিলিয়ে খরচ হল ১৫০টাকা। কেএল-এ সবচে' ফকিরি হালে চুল কাটতেই লাগে ২০০টাকা, মাদাম উইনি লু হাতে কেঁচি ধরলে তো কথাই নাই, ৭০০০টাকা গন উইথ দ্য উইন্ড...

আনিলার অ্যালবাম
আনিলার অ্যালবাম


চুল কেটে গেলাম সিডি কিনতে। জানেমান আনিলার নতুন অ্যালবামটা বের হয়েছে। অর্থহীনের সুমনের সাথে । "গাইবনা" শুনে আমি ফিদা.. এই মেয়েটা গান গাইলে চায়ে চিনি লাগে না.. মুস্কিল হল পুরো অ্যালবামে একটা মাত্র গান ভালো হওয়াটা ঠিক সুলক্ষন না.. এনিওয়ে, আনিলা ইজ আনিলা..

হেলভেশিয়ার ব্রোস্ট
হেলভেশিয়ার ব্রোস্ট


বাড়ি ফিরতে গিয়ে চোখে পড়ল হেলভেশিয়া। একটা সময় মাশীদ আর আমি হরহামেশা আসতাম। ব্রোস্ট খেতে কেমন লাগে সেটা মনে করতে পারলাম না। তাই ঢুকেই পড়লাম। সিঙ্গলে ব্রোস্ট ১০০ থেকে বেড়ে ১৫০টাকায় গেছে। পেপসির দাম আলাদা। আমি দাম দিতে গিয়ে যখন বিশেষ উৎফুল্ল (ক্রেডিট কার্ড অ্যাক্সেপ্ট করেছে!!) তখন পাশের হরিননয়না তরুনীটি পূর্ন সফলতায় আমার পায়ে সাওয়ার ক্রীম ফেলে দিলেন। তারপর কিছুইহয়নি এমনভাব করে গল্প করতে থাকলেন সঙ্গিনীর সাথে। রূপ আর ভব্যতাহীনতা কি সমানুপাতিক হারে বাড়ে?

ব্রোস্ট খেতে গিয়ে আমি বহু চেষ্টা করেও মনে করতে পারলাম না কেন এই জিনিসটাকে গলধকরনের জন্য মুখিয়ে থাকতাম। সময় বড় নিষ্ঠুর, সব কিছু ফিকে করে দেয় সে..

নিউমার্কেট - নীলক্ষেত
নিউমার্কেট - নীলক্ষেত


বিকেলে হাটতে হাটতে গেলাম নিউমার্কেট। সেন্ট ক্যাথরিন ভালো লাগার পিছনের আমার একটা ব্যাখ্যা ছিল। মনে হল ব্যাখ্যাটা ভুল না। নিউমার্কটে সেই একই ভীড়। তবে বুক ভিউ আর সব ডাকসাঁইটে দোকানগুলোর জৌলুস হারিয়ে গেছে। এখন কি বইয়ের কদর নেই?

আমি দুনিয়ার সব দেশেই আমার ট্রেডমার্ক পোষাকে বেড়াতে বের হয়েছি। তাই ঢাকায় খাকি শর্টস আর টি-শার্ট পড়াটা বাদ রাখার মানে হয় না। কিন্তু কে জান্তো সপুত্রক মায়েরা আমার এ বেশ দেখে মুখ টিপে হাসবে.. সিস্টার সাম্ভালকে!..

হাটতে হাটতে এলিফেন্ট রোড, ২৮৮ আর ২৭৮/১। এই দুটো বাড়িতেই আমার শৈশব আর কৈশোর কেটেছে। প্রতিবার দেশে আসলেই এক পলক দেখতে আসি। ২৮৮-র গলিটা আরো ছোট হয়েছে, গেট বসেছে গলির মাথায়। লোকে গাড়ি ঢোকায় কেমন করে কে জানে! এই বাড়িটার প্রাণ থাকলে নিশ্চয়ই খুশি হতো। আমি কথোপকথনটা কল্পনা করি..
-"স্লামালিকুম অপু ভাই (ভাই শব্দটা নিয়ে সংশয় আছে, বাড়ির বয়স আমার চেয়ে বেশী, তার কি ভাই ডাকা মানায়?)
- "আররে ২৮৮, কি খবর? গায়ে এতো শ্যাওলা কেন? হক সাহেবের কি সমস্যা?
- "এই তো, আছি ভালোই। স্যার ভালো নাই, ছোটআপা মরার পর থেকে শরীর খুব খারাপ"


২৮৮ এলিফেন্ট রোড
২৮৮ এলিফেন্ট রোড

অজান্তে জলি আপার প্রসঙ্গটা চলে আসে। আমি বিশেষ অস্বস্তি নিয়ে প্রসঙ্গান্তর করতে চেষ্টা করি


২৭৮ এলিফেন্ট রোড
২৭৮ এলিফেন্ট রোড


২৭৮ এর নতুন নাম হয়েছে, চন্দ্রমল্লিকা। ২৭৮ এর পাশে মেজর সাহেবের বাড়িটা খুঁজে পাইনা। তার বদলে টিনার বেড়া, গায়ে লেখা চাঁদনী ডমইনো। আমরা চলে যাবার অনেক দিন পর চাঁদনী আপাও মারা যান ক্যান্সারে। মেজর সাহেবের বাসার গ্যারেজ ছিল আমারদের প্রিয় খেলার যায়গা। হুমম.. আমি জোরে হাটি, কি দরকার স্মৃতি ঘেঁটে কষ্ট তুলে আনার ।

রাতে লুনা আপির শোধবোধ দাওয়াত ছিল। কজমো লাউঞ্জে খাওয়াবেন। মাসুদ ভাই শুনেই বলেছিলেন ওখানে আমাকে মানায় না। সাতমসজিদের এই লাউঞ্জ ঢাকার তুলনা অনেক এগিয়ে। প্রতি বৃহস্পতিবার গানাবাজনাও হয়। পয়সা দিলে মিউজিক বা ভিডিও ছেড়ে দেবে। মেনুর কোনায় লেখা PDA নিষিদ্ধ। পরে জানলাম PDA মানে Public Demonstration of Affection. আগে নাকি স্মোকিং রুমে ভালোই আদর সোহাগ চলতো। তাই এই আইন। কজমোর খাবার আহামরি না, যতোটা এখানে হাজিরা দেওয়াটা। কফি ওয়ার্ল্ডেও যেতে হবে। সেখানেও নাকি দেখার আছে অনেক

আমাদের জ্যামিতিক পশু
আমাদের জ্যামিতিক পশু


আজকে সকালে আম্মা একটা জ্যামিতিক প্রাণী কিনেই ফেলল । হাসিলের খরচ বাঁচাতে ধানমন্ডির রাস্তায় ছাগলের পাল নিয়ে বের হয় ব্যাপারীরা। খরগোশ সাইজের এই ছাগলটার দাম ৩৫০০! রাস্তায় একটা বাছুর দেখলাম যার দাম দশ হাজার। যেটাকে গরু গরু বলা যায় তার দাম সাতাশ হাজার.. দিনকাল মোটেও ভালো না..


বসুন্ধরা সিটিবসুন্ধরা সিটি
বিকেলে গেলাম বসুন্ধরা সিটি মলে। লেটেস্ট মডেলের সেলফোনে ভরা সব দোকান। প্রচুর মানুষ যে কাঁচা পয়সা নিয়ে ঘোরে সেটা বোঝা যায়..

নকিয়ার রোডশো
নকিয়ার রোডশো


নকিয়ার রোড শো হচ্ছিল। টাইট টিশার্ট পড়া অ্যাটেডেন্টকে দেখেও কেন লোকে ভীড় জমাচ্ছিলো না সেটা একটা রহস্য।


সিডি/ডিভিডির ফ্লোরে চমক অপেক্ষা করছিল। তিন হুজুর প্লেস্টেশনে ফুটবল খেলায় নিমগ্ন। ওয়াও! আরেকটু আগাতেই দেখি এক দোকানে একটা ফরাসী মুভি নাম, Baise Moi, ইংরেজীতে Fuck Me। কুখ্যাত যৌনউদ্দীপক ছবি হিসেবে সারা দুনিয়া ব্যাপী সমালোচিত এই সিনেমার সরবরাহ ঢাকায় দেখে আমি যারপরনাই চিন্তিত। যাবার আগে দেখেছি লোকে ক্যানিবাল হলোকাস্ট দেখে। আমাদের উন্নতি দেখি সব দিকেই।


তবে ডিভিডি কিনে গিয়ে একটা অসাধারন ডকু দেখা হল কাল, মাইকেল মুরের সিকো
এক কথায় অসাধারন.. । মার্কিনি লোলুপ স্বাস্থ্যব্যবস্থার চরম দুর্বলতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন পরিচালক। সচলপাঠকের প্রতি জোর অনুরোধ পারলে একবার চেখে দেখবার, পস্তাবেন না গ্যারান্টিড..
আমাদের কেন একটা মাইকেল মুর নেই? ধ্যাৎ, বরং আনিলার কথাই ভাবি..

কালেক ঈদ, শুভেচ্ছা সবার জন্য..

"দিয়েছিলে যা.. নিতে পারো সবই..... লা লা লা.."

Wednesday, December 19, 2007

ঢাকার চিঠি - ০১

সাইন্স ল্যাব মোড়েঢাকায় পৌছেছি ১৫ তারিখ ভোরে। প্লেন মাটিতে নামার আগেই টের পেলাম হোম টার্ফে খেলা শুরু হয়ে গেছে। প্লেনে সেলফোন কেন অন করা হল এই নিয়ে দুভদ্রলোক তুমুল তর্ক জুড়ে দিয়েছেন। দু গেলাস রেড ওয়াইন আর তিনটা বিয়ার খেয়ে একটা সুখনিদ্রা দিয়েছিলাম, মহাশয়দের কল্যাণে আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠতে হল।

ঢাকায় ইমিগ্রেশন পার হতে আমার "ব্যাপক" ভয় হয়। সেই ভয়ের পাছায় লাথি মেরে অফিসার ভদ্রলোক আমাকে চটপট ছেড়ে দিলেন। লাগেজ হাতিয়ে যখন বের হলাম, তখন বাবা হাত-পা ছুঁড়ে আমার চোখে পড়ার চেষ্টায় ব্যস্ত।

ঢাকার রাস্তায় তেমন পরিবর্তন নেই। অনেকদিন বড় রাস্তায় নোংরা আর ধূলো দেখিনা বলে কিঞ্চিত ধাক্কা খাওয়াটা স্বাভাবিক, কি আর করা!

এবার শুরু থেকেই আমি ভীষন অর্গানাইজড। পিডিএতে টুডু লিস্টে তোলা সব। তাতে ১ নম্বরে লেখা যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠাকরন আর ০ নম্বরে লেখা এটিএম কার্ড এর কার্যকারিতা নিশ্চিতকরন।

সকাল হতেই, মেব্যাংকের হলুদ কার্ডটা নিয়ে স্ট্যানচার্ডের এটিএম এর লাইনে দাড়ালাম। লম্বা লাইন সেখানে। সে আশায় একখাবলা বালি আর খানিকটা সুরকি ঢেলে কার্ড কাজ করলো না। যেসব কার্ডের পেছনে আর ATM মেশিনে PLUS সাইনটা থাকে তারা একে অপরের সাথে কথা বলতে পারে। মুস্কিল হল স্ট্যানচার্ডের ATM চূড়ান্ত মূক-বধিরের মতো কার্ডটা উগড়ে দিল। ভাগ্যিস HSBC বেশী দূরে ছিল না, শেষ রক্ষা হল সেখানে।

রাইফেলস স্কয়ারে ৩০০ টাকায় GP এর কানেকশন নিয়ে ফেললাম। দেশ অনেক এগিয়ে গেছে, সবাই এখন মোবাইল ডেটা সার্ভিস দেয়। প্রতি কিলোবাইট ডেটা মাত্র ২ পয়সা, আমাকে আর কে পায়! বাংলাদেশের মতো জায়গায় রাস্তাঘাটে নেট পাওয়াটা পরম সৌভাগ্য বলতেই হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে এই সুযোগকে ব্যবহার করে অনেক কিছু করে ফেলা সম্ভব, আমার বিশ্বাস অল্প দিনের মধ্যেই আমরা সেই সুফল পেতে শুরু করবো। আরেকটি জিনিস আসলেই উল্লেখ করার মতো, সেটা হল, রাস্তারঘাটে মোবাইল টেলিফোন সার্ভিস বিক্রি করার দোকান। এদের সম্বল একটা সেলফোন আর একটা টুল। মাত্র ৪০০০ টাকা পুঁজিতে একটা মানুষ যদি চাহিদাযুক্ত ব্যবসা শুরু করতে পারে তাহলে তাকে অ্যাপ্রিশিয়েট না করাটা অন্যায় হবে!

বিকেলে আজিজে গেলাম সচল সমাবেশ দেখতে। লাল্লু অমিত (আহমেদ), সুজন অমিত, চোরা বলাই, ডেয়ারিং পিলু ভাই, অমায়িক বিপ্লবদা, ডটু রাসেল, ঝরাপাতা, মেন্টাল, অপালাদি এদের দেখে বুকটা ভরে গেল। এক বছর পর আবার একসাথে হতে পারাটা বড় আনন্দের। আমি আমার ইশকুলের বন্ধুদের সাথেও এভাবে কখনও আলিঙ্গন করা হয় না, টানটা কিভাবে যে এতো আন্তরিক হয় সেটা এক অদ্ভুত রহস্য!!!

নতুন মানুষদের মধ্যে ছিলেন লীলেন ভাই আর মুজিব মেহেদী। বস্তিবাসী লীলেন ভাই চমৎকার লোক, ভারী গলায় আদর করে করে শব্দ উচ্চারন করেন। ফর্সা দিলের এই গুনধর সচলকে গুরু মানতে হবে। মুজিব মেহেদী কথার বলার চেয়ে শোনাতে বিশ্বাসী। অমায়িক এই ভদ্রলোকের সাথে যেটুকু সময় আড্ডা দিলাম তাতে ভালোই লাগলো।

লীলেন ভাই এর ষড়যন্ত্রে আমাকে একটা লেকচার ঝাড়তে হয়েছে। কথা বলার মাঝে খেয়াল করলাম উপস্থিত অনেকের মাঝে কিঞ্চিত অসহায়ত্ব। কবিতার মাঝে ইউনিকোডের প্রসঙ্গ টানাটা কতো বিপদজনক হতে পারে এই প্যাঁচালটা পাড়তে গিয়ে জানা গেল..

সে রাতে সচল ভুড়িভোজটা খাসা হয়েছিল। কি মেনু জানতে চান? চিতল মাছের কোপ্তা, মুরগীর রোস্ট, রুই মাছের পেটি, আচার, ডাল আর সাদা ভাত... সচল সমাবেশ হবে আর তাতে ভুড়িভোজ হবে না তা কি করে হয়!

গতকাল আর আজ বিকেল পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলাম গাড়ি ঠিক করতে । বিকেলে পিলু ভাই হাজির, গেলাম আজিজে। রাসেল ভাই ছিলেন সেখানে। দুজনে সচলের টি-শার্ট পরে এসেছিলেন। খুব শখ ছিল রাসেল ভাইকে মডেল বানিয়ে কিছু ছবি তোলার। কিন্তু ওনার ছবি প্রকাশ হলে মার খাবার ব্যাপক সম্ভাবনা আছে, তাই আপাতত ফোটোসেশন হল না।

..
পিলু ভাইকে বিশাল ধন্যবাদ, বছর দেড়েক পর গরুর চাপ খেলাম। দুটো চাপ আর আটটা লুচি, উমম!!
আরেকটু পরে দেখা হল কৌশিক আর শরতের সাথে। তবে নটার আগেই আড্ডা ভেঙ্গেছে আজ।

এক বছর ঢাকা কেমন লাগলো? হুমম। টিভি চ্যানেল গুলো মান বেড়েছে। ATN এখনও অখাদ্য নাটক দেখায়। পালের নতুন ভেড়া Islamic TV। ইন্ডিয়ার বিখ্যাত একটা রামছাগল জাকির নায়েক। এই রামছাগলটার ছাগলামী বাংলায় ডাব করে প্রচার করাটা দেখে আমি ব্যাপক আনন্দিত!!! ইয়েহ রাইট!!!

মোবাইল ফোনের সার্ভিসে (বিশেষত GP) সুবিধা হয়েছে অনেক। আমি সাকসেসফুলি আমার PDA ফোনে চব্বিশ ঘন্টা অনলাইন থাকতে পারছি, রাস্তাঘাটে MSN এ আলাপ, কিংবা Google Maps এ ঢাকার রাস্তা দেখা কতো কিছুই না করা যায় এখন!!!

রাস্তায় গুরু ছাগল দেখা যাচ্ছে না তেমন। শুনলাম দাম নাকি চড়তির দিকে! কালেক চেক আউট করতে হবে।

শেষ করি একটা মজার খবর দিয়ে। আমাদের সময় পত্রিকার ১৭ তারিখে বের হয়েছিল।
আমাদের সময়