"কালকে থেকে তেলের দাম হবে নব্বই টাকা", টেলিফোনে কিছুটা চিন্তিত গলায় বললেন বাবা।
"এখানেও তো বাড়ল ক'দিন আগে এক নব্বই থেকে দুই সত্তর!.. কি আর করবা, ছোট গাড়ি তেল মনে হয় বেশী খাবে না.."
আমি এবং বাবা দুজনেই জানি এগুলো শান্ত্বনার কথা।
আমরা যখন গাড়ি কিনি তখন অকটেন বিক্রি হতো বিশ টাকায়, ঠিক দশ বছর আগে। আজকে থেকে সাড়ে চারগুন দামে এই জ্বালানী কিনতে হবে। এমনিতেই দেশের মানুষ খাদ্য সংকটে বিপর্যস্ত, এবার তেলের দাম বাড়ায় আক্ষরিক অর্থেই নাভিশ্বাস উঠবে। এসব চিন্তা করলে মেজাজ ভালো থাকে না। তাই দ্য স্টার খুলে সরস সংবাদ খুঁজতে বসি।
"খাইসে!", ডাংকে চৌধুরী স্টাইলে আমি চাপা চিৎকার দেই!
বেচারা আনোয়ার ইব্রাহিমকে আবার সডোমির কেসে ফাঁসানো হচ্ছে, গত শনিবার তারই এক এসিস্ট্যান্ট মামলা ঠুকে দিয়েছে। আনোয়ার সাহেব ভয়ের চোটে লুকিয়েছেন তুর্কি দুতাবাসের ভেতরে। মালয় সরকার এতে বড়উ নাখোশ!
আনোয়ার ছিলেন মাহাথিরের সাক্সেসর, কোন একটা কারনে মাহাথির এর উপর ক্ষেপে গিয়ে ফাঁসিয়ে দেন মিথ্যা সডোমির মামলায়। এখানে ফৌজদারী ঝামেলায় পড়লে অনেক দিন নির্বাচনে যাওয়া যায় না। আনোয়ার ভাই গেল এপ্রিলে ঝামেলামুক্ত হয়েছে, নির্বাচনে যেতে তার কোন বাধা নেই, আর এমনই সময় আবার এই ক্যারা! কেউ বলছে নির্বাচনে কঠিন বাড়ি খেয়ে সরকার মহা চটে গেছে তাই এই শাস্তি, কেউ বলছে আবার আনোয়ারকে নির্বাচনে অযোগ্য করার জন্য এই প্রয়াস। আসল ঘটনা যাই হোক, মিসেস ইব্রাহীম সেদিন জনসমক্ষে একটা ফোটো দেখিয়ে দিলেন, যাতে দেখা যায় অভিযোগকারী পোজ দিচ্ছেন বর্তমান ডেপুটি পিএম-এর সাথে। প্রেসও লুফে নিল। এখন পানি ঘোলা হচ্ছে... এনিয়ে বেশী উৎসাহ দেখালেও বিপদ, আর সব মালেশিয়ানদের মতো আমিও রাজনৈতিক কেচ্ছাগুলো ভুলে যাবার চেষ্টা করি মিনিট পাঁচেক পড়েই..
আজকে সচলায়তনের জন্মদিন। সকালের প্রথম পোস্টটা হয়তো আমার দেওয়া উচিত ছিল, নজমুল আলবাবের পোস্ট দেখে মনে হয়েছে না দিয়ে ভালোই করেছি। সচল প্রজেক্ট যখন কিছুটা আটকে ছিল তখন এই মানুষটা একটু গুঁতো না দিলে সচলের জন্ম আরেকটু পিছিয়ে যেত।
প্রথমেই একটা বিশাল ধন্যবাদ সবার জন্য
।
আমাদের সবার শিশুটাকে আপনারা সবাই কোলেপিঠে নিয়ে বড় করলেন, সেই কৃতজ্ঞতা আমি কিভাবে প্রকাশ করি!!!
অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই শিশুর জন্ম। হিসেব করতে গেলে লাভ-ক্ষতি দুটোই দেখতে হয়। আমাদের ব্যর্থতা অনেক। সচল হবার কথা ছিল মুক্তচিন্তা আর স্বাধীন মতপ্রকাশের কেন্দ্র। মডারেশন ও সদস্যপদ প্রদানের জটিলতায় অনেক কিছু আশানুরূপভাবে হয়নি। মুস্কিল হল, বিকল্প পথও আমরা এখনও খুঁজে পাইনি। তবে যদি একটু তুলনা করে দেখা হয় অন্যান্য সাইটের সাথে তাহলে কিছুটা পার্থক্য আমার বিশ্বাস নজরে পড়বেই।
আমার বড় আক্ষেপ সচলের অধিকাংশই সাহিত্য নিয়ে মগ্ন থাকেন। ব্লগ লেখার উৎসাহটা কোথায় হারিয়ে গেল? গতবাঁধা গল্পকবিতার চেয়ে একটা ওয়েব লগ আমাকে অনেক বেশী টানে..
বিতর্ক নিয়ে আক্ষেপ ছিল, অভিজিৎদা, ফারুক ওয়াসিফ আর সুবিনয় ট্রায়োকে ধন্যবাদ যে এরা মাঝে মাঝেই ঝাঁকি দিয়ে সবাইকে সজাগ করার চেষ্টা করেন।
সচলের দ্বিতীয় জেনারেশনের (মানে যারা কিনা সচলেই ব্লগিং শুরু করেছেন) জন্য আমার ভালোবাসা রইল। প্রথম জেনারেশনের মধ্যে যে বিভক্তি ছিল, দ্বিতীয় জেনারেশনে তা একদমই নেই। এরা সচলকে ভালোবেসেই লিখে যান, সচলায়তনের কালচারের ধারক বাহকও বলতে গেলে এরাই।
গেল একবছরে আমরা বহু উদ্যোগ নিয়েছি। তাতে আপনাদের সাড়া ও সহযোগিতা ছিল অবিভূত করার মতো। এই উৎসাহ বেঁচে থাকুক... জেগে থাকুক সবাই..
সচলায়তন কখনই খুব আহামরি মিশন নিয়ে মাঠে নামেনি। আমরা বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ সাইট হবার খায়েশ পুষে রাখি না। আমরা মিডিয়া হিসাবে তোলপাড় করার ধান্দাও করি না। দিনের শেষে ছোট্ট একটা চেষ্টা, পাঠকের কল্যাণ, অন্তত একটা সাইটে গেলে যেন প্রতিদিন পড়বার মতো কিছু পাওয়া যায়। তাই কজন সচল হল তা না ভেবে সচলায়তন সচল লেখা আর সচল ভাবনায় পূর্ণ কিনা সেই চিন্তায় বেশী কাতর আমরা।
ভালোবাসা একটা অদ্ভুত জিনিস। আমি কোন দিন এর ব্যাখ্যা করতে পারিনা। সচলায়তনকে এই অদ্ভুত জিনিসটা লেপ্টে আছে দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে, আমি দেখি আর আশ্চর্য হই.. পৃথিবীতে আশ্চর্য হবার জিনিসের শেষ হয়না...